আল্লাহুম্মা ইন্নী আউ’যু বিকা মিন, ওয়াছাইছাচ্ছাদরী ওয়াফিতনাতিল ক্বাবরি ওয়া শাভাতিল

আমরি আল্লাহুম্মা ইন্নী আউ’য় বিকা মিন শাররি মা ইয়ালিজু ফীললায়লি ওয়ামিন শাররি মা ইয়ালিজ ফীন নাহারি ওয়ামিন শাররি মা তাহব্বু বিহির রিয়াহু ওয়ামিন শাররি বাদাইক্বিদদাহ রি।

ইয়াওমে ‘নাহার’ বা কুরবানির দিনের আমল

কুরবানির দিনকে ‘নাহার’ বলা হয়। নিম্নে এ দিনের নফল

ইবাদতের বর্ণনা পেশ করা হলো।

ঈদের রাতের নফল ইবাদত- কুরবানির ঈদের রাতে দুই

রাকআতের নামায রয়েছে। প্রত্যেক রাকআতে সূরা ফাতিহা পাঠের পর সূরা ইখলাস ও সূরা ফলকু পনেরবার করে পাঠ করবে। দ্বিতীয় রাকআতে সালাম ফিরানোর পর তিনবার আয়াতুল কুরসি এবং পনেরবার ইস্তিগফার পাঠ করবে। এর পর ইহকালীন ও পরকালীন জীবনের মঙ্গল কামনায় যা ইচ্ছা মহান আল্লাহ পাকের দরবারে দোআ’-প্রার্থনা করবে।

এ মাসের দশ তারিখের রাত এশা নামাযের পর এক নিয়তে চার রাকআত নামায আদায় করবে। প্রত্যেক রাকআতে সূরা ফাতিহার পর সূরা ইখলাস একবার, সূরা ফলক একবার ও সূরা নাস একবার করে পাঠ করবে। সালাম ফিরানোর পর সত্তরবার ‘সুবহানাল্লাহ’ সত্তরবার দরূদ শরীফ পাঠ করে মহান আল্লাহ পাকের পবিত্র দরবারে স্বীয় গোনাহের ক্ষমা প্রর্থনা করবে। ইনশাল্লাহ এ নামাযের বরকতে আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তাআ’লা এ নামায আদায়কারীকে বিগত জীবনের সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করে দেবেন।
নিয়তে বার রাকআত নামায আদায় করবে। প্রত্যেক রাকআতে সূরা ফাতিহার পর আয়াতুল কুরসি একবার, সূরা ইখলাস পনেরবার করে পাঠ করবে। এ নামায আদায়কারীকে মহান আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে পরিপূর্ণ এক বছর ইবাদতের সওয়াব দান করবেন। তাকে আল্লাহ তা’আলা কবরের শাস্তি তাকে বেহেশতে প্রবেশের সুযোগ দেবেন।

কুরবানির দিনের নফল ইবাদত

যে কোন জন্তু দ্বারা কুরবানি দেয়ার পর দুই রাকআত নফল নামায আদায় করবে। প্রত্যেক রাকআতে সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর সূরা ‘ওয়াশামছি’ পাঁচবার পাঠ করবে। এ নামায আদায়কারীর ইবাদত হাজী সাহেবানদের অর্জিত সওয়াবে অন্তর্ভুক্ত হবে এবং কুরবানিকৃত জন্তর শরীরের লোম পরিমাণ নেকী পেয়ে যাবে। সাহাবায়ে কেরাম রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুম আরয করলেন ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা’আলা
আলায়হি ওয়াসাল্লাম যদি এমন কোন অভাবী লোক যার কুরবান করার মত কোন সামর্থ নেই, এমন ব্যক্তির অবস্থা কি ধরনের হবে? হুয়র করীম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ ফরমান- ঈদের নামায আদায় করে এসে, দুই রাকআত নামায আদায় করবে। প্রত্যেক রাকআতে সূরা ফাতিহার পর তিনবার সূরা কাউসার পাঠ করবে। এর প্রতিদানে আল্লাহ তা’আলা তাকে উট দ্বারা কুরবানি করার পূণ্য দান করবেন।

যিলহজ্ব মাসের দশ তারিখ ঈদুল আদহার নামায আদায় করার পর দুই সালামের সাথে চার রাকআত আদায় করবে।

ইনশাল্লাহ এ নামায আদায়কারীকে মহান আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীন কুরবানির সওয়াব দান করবেন। যিলহজ্ব মাসের দশম দিনে ঈদের নামায আদায়ের পর এক নিয়তে চার রাকআত নামায আদায় করবে। প্রথম রাকআতে সূরা ফাতিহার পর সূরা আ’লা একবার, দ্বিতীয় রাকআতে সূরা ফাতিহার পর সূরা শামস একবার, তৃতীয় রাকআতে সূরা ফাতিহার পর সূরা দোহা একবার পাঠ করবে। এ নামায আদায়কারীকে মহান আল্লাহ পাক সমস্ত আসমানী কিতাব পাঠ করার পূণ্য দেবেন। যিলহজ্ব মাসের দশম তারিখ যোহর নামাযের পর দুই রাকআতের নিয়তে বার রাকআত নামায আদায় করবে। প্রত্যেক রাকআতে সূরা ফাতিহার পর একবার আয়াতুল কুরসি, এগারবার সূরা ইখলাস, এগারবার সূরা ফলক এবং এগারবার করে সূরা নাস পাঠ করবে। এ নামায আদায়কারীর জন্য হাশরের দিন সবকিছু সহজ হয়ে যাবে এবং তার গোনাহ আল্লাহ তা’আলা ক্ষমা করে, তার মাথায় নূরানী তাজ পরিধান করিয়ে তাকে বেহেশতে প্রবেশ করানো হবে, ইনশাল্লাহ।

ঈদুল আদহার দিন যে কোন একটি সময় ওযুসহকারে কুরআনুল কারীমের কমপক্ষে একশত আয়াত তেলাওয়াত করবে। মহান আল্লাহ পাক তাকে বেহেশতের অসংখ্য নেয়ামতরাজি প্রদান করবেন, ইনশাল্লাহ তা’আলা।

ঈদুল আদহার দিন গোসল করার সওয়াব এত অধিক যেন ঐ ব্যক্তি রহমতের সাগরে ডুব দিয়েছেন, যার ফলে তার জীবনের সমস্ত গোনাহ ক্ষমা হয়ে যায়, হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ ফরমান- ‘যে কেউ ঈদুল আদহার দিন নতুন কাপড় পরিধান করে, পুরাতন কাপড় গুলো কোন অভাবীকে দান করে, আল্লাহ তা’আলা ক্বিয়ামতের দিবসে তাকে সত্তর ধরনের বেহেশতী নুরানী লেবাস পরিধান করাবেন, লেওয়ায়েহামদের নিচে তাঁকে দাঁড়

করাবেন এবং ফিরিশতাদের সম্মান প্রদর্শনের নিয়তে মুসলিমদের সাথে করমর্দন করবেন তারা আঁতর লাগ সওয়াব অর্জন করবে। সাথে সাথে তার আমল নামায় পোদ্দ আযাদ করার সওয়াব লিপিবদ্ধ করা হবে।

বছরের সমাপনী দিবসের নফল ইবাদত

মাহে যিলহজ্বের শেষ তারিখ, সেটা ঊনত্রিশ তারিখ হোক ত্রিশ তারিখ হোক অর্থাৎ বছরের শেষ দিন যোহরের নামা পর অথবা মাগরিবের নামাযের পর দুই রাকআত নাম আদায় করবে। প্রত্যেক রাকআতে সূরা ফাতিহার ইচ্ছানুযায়ী যে কোন সূরা পাঠ করবে। সালাম ফিরানোর নিম্নোক্ত কলেমাটি সাতবার পাঠ করবে। যেটা জান ও মাছে হেফাজতের জন্য অতি উত্তম। দোআ’টি হলো নিম্নরূপ

اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ بِسْمِ

الله ما عملت من عمل في هذه السنة مما نهت سبت ولم تنسَهُ وَ عَلِمْتُ عَنى بقدرتك على عقربتي عوتِي إِلَى التَّوْبَتَ بَعْدَ جُرْمِي عَلَيْكَ اللَّهُمَّ إِنِّي ب إِلَيْكَ وَاسْتَغْفِرُكَ مِنْهَا يَاغْفُورُ فَاغْفِرْ لِي مَا لتُ مِنْ عَمَلٍ تَرْضَاهُ عَنِّى وَعَدَتْنِي عَلَيْهِ التَّوْبَةَ فَتَقَبَّلُهُ ن وَلَا تَقْطَعُ رَجَالِي يَا عَظِيمَ الرَّجَاءِ اللَّهُمَّ ارْزُقْنِي خَيْرَ اللهِ السَّنَةِ وَقِنِي فِتْنَتَهَا بِرَحْتِكَ يَا أَرْحَمَ الرَّحِمِينَ آمِينَ

উচ্চারণ- বিছমিল্লাহির রাহমানির রাহিমি- আল্লাহুখ এ মাআ’মিতু মিন্ আমালিন ফী হাযিহিচ্ছানাতি মিম্মা নাহভাইপ ওয়া নাছীতু ওয়ালাম, তান্‌ছাহ ওয়া আ’লিমতু আ’শ্রীদ কুদরাতিকা আ’লা আক্বরাবাতী ওয়া দাআ’ওয়াতান

ইলাততাওবাতি বা’দা জুরমী আ’লায়কা আল্লাহুম্মা ইই চল আতুবু ইলায়কা ওয়াআছতাগফিরুকা মিনহা ইয়া গাড়ল হা ফাগফিরলী মাআ’মিলতু মিন আমালিন তারদাহ আইক ওয়াআ’দ্রানী আলায়হিত্ তাওবাতা ফাতাক্বাব্বাল মিয় ওয়ালা তাক্বতাত রাজাঈ ইয়া আযীমার রাজাঈ, আল্লাহুম্মা এ যুক্বনী খায়রা হাযিহিচ্ছানাতি ওয়াক্বিনী ফিতনাতায় বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীনা ‘আমিন’।

ইনশাল্লাহ এ দোআ’ পাঠকারীকে আল্লাহ পাক সব ধরনে বিপদ আপদ, বালা-মসিবত থেকে হেফাযত করবেন।