কোরআনের বার্তা

হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ নিজাম উদ্দীন

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা মানব জাতির হেদায়েতের জন্য কুরআনুল কারীম অবতীর্ণ করেছেন , কোরআন মানব জাতিকে কি বার্তা দেয়? কিভাবে কল্যাণের পথ দেখায়? কিভাবে সুস্থ সমাজ পরিচালিত করার জন্য কুরআনের বিধি বিধান পরিলক্ষিত হয়?দৃষ্টি দিলেই সহজে উপলব্ধি করা যায়,কোরআন আমাদের জন্য সর্বাধিক কল্যাণকর গাইডলাইন

নিখুঁতগাইডলাইন: দেশ, জাতি ,সুষ্ঠু সমাজ পরিচালনার জন্য নিখুঁত গাইড লাইন প্রয়োজন। আমরা মুসলিম জাতি হিসেবে কিংবা একজন মানুষ হিসেবে যদি একটা সুষ্ঠু গাইড লাইন অনুসন্ধান করি, কুরআনুল কারীম তার জন্য নিখুঁত গাইডলাইন। আল্লাহ তাআলার ইরশাদ করেন –  185شَهْرُ رَمَضَانَ الَّذِي أُنزِلَ فِيهِ الْقُرْآنُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَبَيِّنَاتٍ مِّنَ الْهُدَىٰ وَالْفُرْقَانِ অনুবাদ ۚ রমজান মাস (সে মাস) যাতে অবতীর্ণ হয়েছে কুরআন, যা মানুষের জন্যে হেদায়াত এবং (যাতে রয়েছে) পথপ্রদর্শনকারী এবং (সত্য-মিথ্যার) পার্থক্যকারী সকল সুস্পষ্ট নিদের্শনা তথা নিখুঁত গাইডলাইন।
সূরা বাকারাহ ১৮৫
উত্তম অভিভাবক: আমাদের অনেকের অভিভাবক সুসময়ের জন্য,অনেকের অভিভাবক পাচ কিংবা দশ বৎসর তথা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ।অভিভাবক কখনো  কল্যাণকর আবার কখনো অকল্যাণকর হন কোরআনুল কারীম আমাদের বার্তা দিচ্ছেন,আমাদের জন্য সর্বাধিক কল্যাণকর এবং পরকালীন জগতের জন্য উত্তম অভিভাবক হচ্ছেন আল্লাহ তায়ালা ।আল্লাহতালাকে যে অভিভাবক হিসাবে গ্রহণ করবেন, তার জন্য ইহ এবং পরকালীন জগতে কোন ভয় নাই। সুতরাং ঈমানদারের অভিভাবক আল্লাহ তায়ালা ,তিনি এরশাদ করেন
اللَّهُ وَلِيُّ الَّذِينَ آمَنُوا يُخْرِجُهُمْ مِنَ الظُّلُماتِ إِلَى النُّورِ
আল্লাহ্ ঈমানদারগণের অভিভাবক, তিনি তাদেরকে (সকল প্রকার) অন্ধকার থেকে বের করে আলোর দিকে নিয়ে আসেন। সূরা বাকারাহ ২৫৭

প্রত্যেক বিষয়ের সমাধান : যে কোন গ্রন্থ একটি কিংবা দুটো বিষয় নিয়ে আলোচনা করে কিন্তু কুরআনুল কারীম মানব জীবনের সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করে তিনি এরশাদ করেন وَنَزَّلْنَا عَلَيْكَ الْكِتَابَ تِبْيَانًا لِكُلِّ شَيْءٍ وَهُدًى وَرَحْمَةً وَبُشْرَى لِلْمُسْلِمِينَ
আপনার প্রতি মহাগ্রন্থ প্রেরণ করেছি যা সকল কিছুর সুস্পষ্ট বর্ণনা এবং মুসলমানদের জন্যে হেদায়াত, রহমত ও সুসংবাদ।সূরা নাহল ৮৯

জীবনের প্রতিক্ষণে প্রভুর স্মরণ : যখন আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তায়ালাকে স্মরণ করবেন আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা আপনার স্মরণের উত্তম উত্তর দিবেন। আপনি যদি আল্লাহকে ডাকেন, আল্লাহ আপনার ডাকে সাড়া দেবেন। আল্লাহ তাআলাকে আপনি যত বেশি স্মরণ করবেন ,যত বেশি আল্লাহর জিকির করবেন, যত বেশি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর দুরুদ শরীফ আদায় করবেন, তত বেশি আল্লাহর প্রিয় বান্দা হবেন তিনি এরশাদ করেন
فَاذْكُرُونِي أَذْكُرْكُمْ وَاشْكُرُوا لِي وَلَا تَكْفُرُونِ   তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমি তোমাদেরকে স্মরণে রাখবো এবং আমার কৃতজ্ঞতা আদায় করো, আর কখনো আমার প্রতি অকৃতজ্ঞ হয়ো না
সূরা বাকারাহ১৫২
শিক্ষা জীবনের সূচনা :একজন সন্তান যখন শিক্ষা অর্জন করতে যাবে, শিক্ষা অর্জনটা কিভাবে শুরু করবে, তার শিক্ষার প্রক্রিয়াটা কেমন হবে ,কার নামে হবে ,কিসের মাধ্যমে হবে,সব কিছুর বর্ণনা কোরআনুল কারীমের মধ্যে রয়েছে ,শিক্ষাটা যদি সঠিকভাবে হয়, নৈতিকতার সাথে হয়, তার জীবন স্মরণীয় বরণীয় হয়ে থাকবে। আমাদের শিক্ষাজীবন শুরু হবে মহান আল্লাহতালার নামে, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা হবে ,কোরআনুল কারীম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ মোতাবেক, সাহাবায়ে কেরামের আদর্শ মোতাবেক, আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তায়ালা কুরআনুল কারীমের মধ্যে এরশাদ করেন
اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ
خَلَقَ الإِنسَانَ مِنْ عَلَقٍ
اقْرَأْ وَرَبُّكَ الأَكْرَمُ
الَّذِي عَلَّمَ بِالْقَلَمِ
عَلَّمَ الإِنسَانَ مَا لَمْ يَعْلَمْ
(হে হাবীব!) পড়–ন আপনার প্রতিপালকের নামে (শুরু করে), যিনি (সকল কিছু) সৃষ্টি করেছেন।তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন (মায়ের জরায়ুতে) জোঁকের ন্যায় ঝুলন্ত পিন্ড থেকে।–ন, আর আপনার প্রতিপালক মহামহিমান্বিত,যিনি (লেখা-পড়ার) জ্ঞান শিক্ষা দিয়েছেন কলমের মাধ্যমে,মানুষকে (এছাড়াও) সেসব (কিছু) শিখিয়েছেন যা সে জানতো না।

অথবা যিনি (সর্বশ্রেষ্ঠ মর্যাদার) মানব (মুহাম্মাদ মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম)-কে (কলমের সাহায্য ছাড়াই) ঐ সমস্ত জ্ঞান দান করেছেন, যা তিনি পূর্বে জানতেন না।

আল্লাহ পর্যাপ্ত পৌছার মাধ্যম তালাশ: আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে বিভিন্ন তালাশের মাধ্যমে আল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছার নির্দেশ দিয়েছেন, মাধ্যমটা হতে পারে কুরআনুল কারীমের তেলাওয়াত ,জিকির, দোয়া মোনাজাত, আউলিয়ায়ে কেরামের বাইয়াত, নেক বান্দাদের সুহবত ,আলেম-ওলামাদের মজলিস ইত্যাদি এগুলো বান্দা যখন মনেপ্রাণে ধারণ করে তখন বান্দার হৃদয়ে আল্লাহতালার জিকির হয় এতে করে বান্দা খুব সহজে আল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছে যান তিনি এরশাদ করেনوَاتَّبِعْ سَبِيلَ مَنْ أَنَابَ إِلَيَّ ۚ ثُمَّ إِلَيَّ مَرْجِعُكُمْ فَأُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ  তাদেরকে উত্তম সাহচর্য প্রদান করো। আর (আকীদা ও পরকালীন বিষয়ে) এমন লোকের আনুগত্য করো যে বিশুদ্ধচিত্তে আমার অভিমুখী হয়েছে ও আমার প্রতি আনুগত্যের পথ গ্রহণ করেছে। অতঃপর আমার দিকেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন, তখন আমি তোমাদেরকে সেসব কর্মকান্ড সম্পর্কে অবগত করবো যা তোমরা করতে।সূরা লোকমান ১৫

নামাজ আদায় করা: নামাজ হল ঈমানদারের মেরাজ স্বরুপ, আল্লাহর সাথে বান্দার কথোপকথনের মাধ্যম হল নামাজ,নিয়মিত নামাজ আদায় করার মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলা সাথে বান্দা কথোপকথন করতে পারেন, বান্দার সমস্যা গুলো সমাধান করতে পারেন, যেভাবে তিনি কোরআনুল কারীমের মধ্যে এরশাদ করেছেন তোমরা নামাজ এবং ধৈর্যের মাধ্যমে সাহায্য কামনা করো
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ ۚ إِنَّ اللَّهَ مَعَ الصَّابِرِينَ
হে ঈমানদারগণ! ধৈর্য এবং নামাযের মাধ্যমে (আমার নিকট) সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ (সর্বদা) ধৈর্যশীলদের সাথে রয়েছেন।সূরা বাকারাহ ১৫৩
বান্দার চলার ধরন :একজন মানুষ কিভাবে জীবন যাপন করবে, সমাজ করবে ,পরিবার করবে, দেশ পরিচালনা করবে,এমনকি কিভাবে হাঁটাচলা করবে, সে বিষয়ে কুরআনুল কারীম সুস্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, আল্লাহ বলেন তোমরা দম্ভ করে অহংকার করে জমিনে হাঁটাচলা করো না , নম্র ভদ্রতার সাথে চলাফেরা কর,দম্ভ কারীকে পছন্দ করেন না।
وَلَا تَمْشِ فِى ٱلْأَرْضِ مَرَحًا ۖ إِنَّكَ لَن تَخْرِقَ ٱلْأَرْضَ وَلَن تَبْلُغَ ٱلْجِبَالَ طُولًا
আর ভূ-পৃষ্ঠে দম্ভভরে বিচরণ করো না, নিশ্চয়ই তুমি না কখনো জমিনকে (নিজের ঔদ্ধত্যের জোরে) বিদীর্ণ করতে পারবে, আর না কখনো তুমি উচ্চতায় পর্বতমালায় পৌঁছুতে পারবে। (তুমি যেমন তেমনই থাকবে।)
সূরা ইসরাঈল ৩৭

বান্দার সমস্ত কর্ম আল্লাহর দৃষ্টিসীমার মধ্যে :মানুষ এমন কিছু কর্মকাণ্ড ঘটিয়ে ফেলে মনে হয়, যেন সে অন্য জগতে চলে গিয়েছে,  মানুষের সমস্ত কাজ আল্লাহতালা দৃষ্টিসীমার মধ্যে, বান্দার জীবনের সমস্ত ছোট বড় গুনা গুলো আল্লাহর দরবারে উপস্থাপন করা হবে, গুনাহের পরিমাণ যত বেশি হবে বান্দা তত বেশি লজ্জিত হবে, অপমানিত হবে, শাস্তি ভোগ করতে হবে ।আমাদের বিশ্বাস থাকতে হবে প্রত্যেকটা কর্ম আল্লাহ সুবাহানাহু তায়ালা দেখতে পাচ্ছেন ,এজন্য জিব্রাইল আমিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উত্তরে বলেছিলেন এহসান হল মানুষ এমন ভাবে জীবন যাপন করবে ,আল্লাহ তাকে দেখতে পাচ্ছেন ,যদিও বান্দা কপালের চোখ দিয়ে দেখতে পাচ্ছে না এটাই হলো এহসান।আল্লাহ এরশাদ করেন
يَا بُنَيَّ إِنَّهَا إِن تَكُ مِثْقَالَ حَبَّةٍ مِّنْ خَرْدَلٍ فَتَكُن فِي صَخْرَةٍ أَوْ فِي السَّمَاوَاتِ أَوْ فِي الْأَرْضِ يَأْتِ بِهَا اللَّهُ ۚ إِنَّ اللَّهَ لَطِيفٌ خَبِيرٌ(লুকমান বললেন,) ‘হে আমার পুত্র! কোনো বস্তু যদি সরিষার দানা পরিমাণও হয়, অতঃপর তা কোনো পাথরে (লুকায়িত) থাকে অথবা আকাশমন্ডলীতে অথবা পৃথিবীতে, (তখনও) আল্লাহ্ একে (কিয়ামতের দিন হিসাবের জন্যে) উপস্থাপন করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ দর্শী, সর্বাধিক অবগত
সূরা লোকমান ১৬

রাতের সালাত আদায় করা: পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি রাতের শেষভাগের নামাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলত পূর্ণ ।রাসূলুল্লাহ সালাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি মানুষকে সালাম দেয় ,ক্ষুধার্ত কে খাবার খাওয়াই, রাতের শেষভাগে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে, সে যেন নিরাপদে জান্নাতে চলে যায় ,তিরমিজি শরীফ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিয়মিত তাহাজ্জুদের নামাজ পড়তেন, আউলিয়া কেরাম  নিয়মিত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তেন ,গাউসে পাক ৪০ বছর এশার নামাজের অজু দিয়ে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করেছেন, আমরা নিয়মিত তাহাজ্জুদের মাধ্যমে আল্লাহর প্রিয় বান্দা হতে পারব ইনশাআল্লাহ তিনি ইরশাদ করেন  وَمِنَ اللَّيْلِ فَتَهَجَّدْ بِهِ نَافِلَةً لَكَ عَسَى أَنْ يَبْعَثَكَ رَبُّكَ مَقَامًا مَحْمُودً
আর রাতের কিছু সময়েও (জাগ্রত থেকে কুরআন পাঠে) তাহাজ্জুদ আদায় করুন। এটি খাস, আপনার জন্যে অতিরিক্ত (করে দেয়া হয়েছে)। নিশ্চয়ই আপনার প্রতিপালক আপনাকে ‘মাকামে মাহমুদ’-এ অধিষ্ঠিত করবেন (অর্থাৎ সেই মহান শাফায়াতের স্তর, যেখানে পূর্ববর্তী ও পরবর্তীগণের সকলে আপনার দিকে প্রত্যাবর্তন করবে এবং আপনার প্রশংসা করবে)।
তাহাজ্জুদের সময় এক গুরুত্বপূর্ণ সময় যাতে আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার আকাশে নেমে আসেন এবং বান্দাদেরকে ডাকতে থাকেন। অথচ এই গুরুত্বপূর্ণ মুহুর্তে আমরা ঘুমিয়ে অলসতায় নষ্ট করে দেই। সহীহ বুখারী’র ৭৪৯৪ নং হাদিসের বর্ণনায় এসেছে,

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: ” يَنْزِلُ رَبُّنَا تبارك وتعالى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الْآخِرُ يَقُولُ: مَنْ يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ؟ مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ؟ مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ؟ “

অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমাদের রব্ব প্রত্যেক রাতে যখন রাতের শেষ তৃতীয়াংশ বাকী থাকে তখন পৃথিবীর আসমানে নেমে আসেন এবং বলেন, আমার কাছে যে দু’য়া করবে, আমি তার দু’য়া কবুল করব। আমার কাছে যে চাইবে, আমি তাকে দেব। আমার কাছে যে ক্ষমা প্রার্থনা করবে, তাকে আমি ক্ষমা করে দেব। (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৭৪৯৪)
কুরআনের অগণিত বার্তা থেকে উল্লেখিত বার্তা গুলোর উপর আমল করার জন্য আল্লাহ  তা’আলা আমাদের তৌফিক দান করুন ,আমীন

One thought on “কোরআনের বার্তা

  1. ইসতিয়াবের এই যাত্রাকে আল্লাহ তাআলা কবুল করুন, আমীন ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *