মাওলানা মুহাম্মদ ইলিয়াস আলকাদেরী
যে কোন ঈমানদারকে কামেল হওয়ার জন্য শরীয়তের পাশাপাশি ত্বরিকত পালন করতে হয়। ত্বরিকত পালনের মাধ্যমে তিনি দিন দিন আল্লাহর সান্নিধ্য অর্জনে সক্ষম হতে থাকেন। এক পর্যায়ে আল্লাহ তাকে ভালোবাসেন। যখন আল্লাহ তাকে ভালোবাসেন তখন তিনি (আল্লাহ) তাঁর জান, চোখ, জিহ্বা, হাত ও পা হয়ে যান। অবশ্য, তা এ অর্থেই যে, তিনি (আল্লাহর প্রিয় বান্দা) আল্লাহর কুদরতের কদরতের জিহ্বায় কথা বলেন, আল্লাহর কুদরতের হাতে ধরেন এবং আল্লাহর কুদরতের পায়ে হাঁটেন। অর্থাৎ তাঁর অঙ্গ প্রত্যঙ্গের মধ্যে আল্লাহর কুদরতের শক্তি চলে আসে। হলে তিনি (আল্লাহর বান্দা) স্বীয় কান দ্বারা অনেক দূর হতে শুনতে পারেন। স্বীয় চোখ দ্বারা আরশ মুয়াল্লা হতে হাহতাসারা পর্যন্ত কোথায় কী হচ্ছে তা দেখেন। তিনি জিহ্বায় যে কথা বলেন্জ হাত দ্বারা অসম্ভমানোর কাছে কবুল। হয়ে যায়। তিনি নিজ হাত সম্ভব করতে পারেন। তিনি আপন পা দ্বারা ‘তাইয়্যুল আরদ্বা (অল্প সময়ে পৃথিবী ভ্রমণ) করতে পারেন।
নিম্নে ত্বরিকতের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব তুলে
ধরার চেষ্টা করছি।
১. ত্বরিকত ছাড়া পূর্ণতা আসে না
যে কোন মু’মিন কামেল (পূর্ণ ঈমানদার) তথা আল্লাহর অলি হওয়ার জন্য শরিয়ত পালনের সাথে সাথে ত্বরিকত পালন করতে হয়। ত্বরিকত বিহীন বেলায়ত অর্জন করা সম্ভব নয়। গাউসে পাক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু سر الاسرار কিতাবের মধ্যে একটি হাদীস উদ্ধৃত করেন, রাসূল পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেন-
الشريعة شجرة والطريقة اغصانها والمعرفة أوراقها . والحقيقة ثمرها
অর্থাৎ “শরিয়ত হল বৃক্ষ, ত্বরিকত হল এর ডাল-পালা মারিফত হলো তার পাতা-পল্লব এবং হাকিকাত হলো তার ফল।” অতএব একটি পূর্ণাঙ্গ বৃক্ষের জন্য যেমন ডাল- পালার প্রয়োজন তেমনি একজন মু’মিনের জন্য ত্বরিকত প্রয়োজন।
ত্বরিকতে প্রবেশ কালে পাপমুক্ত হওয়া
যে কোন ঈমানদার ত্বরিকতে প্রবেশ করেন একজন হক্কানী-রব্বানী খেলাফত প্রাপ্ত পীর মুরশেদের হাতে বায়াত হওয়ার মাধ্যমে। উক্ত পীর-মুরশেদের হাতে রায়াত হওয়ার সময় তিনি তওবা পড়ান। এ তাওবার মাধ্যমে তার (মুরিদের) হজুল্লাহ্ সংক্রান্ত সমূদয় পাপ মোচন হয়ে যায়। তবে হক্কুল ইবাদ তথা বান্দার এটা থেকে মুক্তা বান্দার হক সংক্রান্ত পাপ মাফ হয় নিতে হয়। সুতরাং বায়াত ও তাওবার মাধ্যমে (হকুল ইবাদ না থাকলে) হক্কুল্লাহ সম্পর্কীয় সমদয় পাপ হতে মুক্ত হয়ে যেভাবে একজপির মতো মাসুম (নিস্পাপ) হয়ে যায় থাকার সময় শিরক-কুফরসহ যত বড় বড় গুনাহ করেছে সবগুলো হতে মুক্ত হয়ে নিলামতর মাধ্যমে হাজি সাহেবও পিাপাপু হয়ে যায়। অনুরূপ হজ্বের যেমন সদ্যজাত শিশু।
বায়াতের মাধ্যমে ত্বরিকত প্রবর্তকের দামানে আসা যায়
একজন লোক যখন সাইয়্যেদুনা গাউসে পাকমীলিবিন্দু ত্বরিকতের প্রবর্তক। সাইয়্যেদুনা খাজা মুঈন উদ্দিন হাসান সনজরী চিশতী, সাইয়্যেদুনা বাহাউদ্দিন নকশবন্দী আলায়হিমসহ যে কোন হক ত্বরিকলী ও রাহমাতুল্লাহি খলিফার হাতে বায়াত হয় তখন সে প্রথম শায়খের দামানে চলে যায়। তদুপরি যে খলিফার হাতে বায়াত হয় সে খলিফার নেগাহ্, নিয়ন্ত্রণ ও দায়িত্বে চলে যায়। যেমন গাউসে পাক আবদুল কাদের জিলানী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, لو انكشفت عورة مريدى لسترتها ولوكان في المشرق وأنا في المغرب অর্থাৎ যদি আমার মুরিদের সতর খুলে যায় অবশ্যই আমি তা ঢেকে দেই যদিও সে পৃথিবীর প্রাচ্যে থাকে আর আমি থাকি পাশ্চাত্যে। গাউসে পাক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু আরো বলেছেন,
مريدي لا تخف الله ربي عطاني رفعة نلت المناليঅর্থাৎ “হে আমার মুরিদ তুমি (ইহ-জগত-পরজগতে) ভয় করো না। কেননা আল্লাহ আমাদন আপন উত্থত সম্পর্কে আল্লাহ্ আমার রব। তিনি আমাকে উচ্চ যেভাবে প্রত্যেক নবী-রাসূল খবর রাখেন ও ওয়াকিফহাল অনুরূপ আপন-আপন ভক্ত-মুরিদ সম্পর্কেও প্রত্যেক সত্যিকার কামেল পীর মুরশিদও ওয়াকিফহাল বা অবহিত اعیلونی یا عباد الله STCOM | Caste RH আল্লাহর বান্দাগণ। আপনারা আমাকে সাহায্য করুন) বলে আহ্বান করলে আব্দাল ও রেজালুল গায়ব এসে সাহায্য করেন। অনুরূপ বিপদে পড়ে আপন আপন কামেল পীর- মুরশেদকে আহ্বান করলে, স্মরণ করলে, তাঁদেরকে উসিলা হিসেবে আল্লাহর কাছে পেশ করে দোয়া করলে ওই পীর মুরশেদ তাকে দূর হতে সাহায্য করেন এবং পীর মুরশেদের উসিলায় আল্লাহ তা’আলা বিপদ থেকে মুরিদকে উদ্ধার করেন।
ত্বরিকতের সবক আদায়ে বর্ণনাতীত ফায়দা
যে কোন ব্যক্তি একজন হক্কানী পীর মুরশেদের হাতে বায়াত হলে তাওবা পড়িয়ে তাকে পাপমুক্ত করে প্রথম সবকে দেন পাঁচ ওয়াক্ত নামায। বলেন, আজ থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামায বাধ্যতামূলক। এ পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায়ে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামায আদায় হয়। কেননা মেরাজের রাতে পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামায ফরজ হয়েছিল। হযরত মুসা আলায়হিস্ সালামের পরামর্শে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লাঘব করে পাঁচ ওয়াক্ত করা হয়। তাই পাঁচ ওয়াক্ত আদায়ে পঞ্চাশ ওয়াক্ত আদায় হয় এবং পঞ্চাশ ওয়াক্তের সওয়াব পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে আল্লাহর বাণী- مَا يَبْدَّلُ القول الذى )আমার কথার পরিবর্তন নেই)। পক্ষান্তরে, পাঁচ ওয়াক্ত নামায ত্যাগ করলে প্রকারান্তরে পঞ্চাশ ওয়াক্ত বাদ দেয়া হয়। এ ছাড়া ত্বরিকতের শায়খ আগে কতগুলো সবক দান করেন। যেমন আমাদের ত্বরিকতের শায়খ আওলাদে রাসুল রাহনুমায়ে শরিয়ত ও ত্বরিকত সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ মুদ্দাজিল্লুহুল আলী বায়াত করানোর পর ফজরের নামাযের পর একশত বার দুরূদ শরীফ, দু’শত বার লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ এবং দু’শত বার ইল্লাল্লাহ্ ও দু’শত বার আল্লাহু জিকির আদায়ের নিদের্শ দেন। মাগরিবের নামাযের ফরজ ও সুন্নাত আদায়ের পর ছয় রাকাত সালাতুল আওয়াবিন এরপর একশত বার দরূদ শরীফ আদায়ের নির্দেশ দেন। প্রতি চন্দ্র মাসের ১১ তারিখ
গেয়ারতী শরীফ বিভিন্ন খানকা শরীফে আদায়ের নির্দেশন রয়েছে। শেষরাতে ঘুম হতে জাগ্রত হয়ে সালাহছ তাহাজ্জুদ আদায় ও অনিককে ততবাতম বৈশিষ্ট্য। দিনে রাতে যতবার ওযু করে ততবার দু’রাকাত করে তাহিয়্যাতুল ওযুর নামায আদায়ে ত্বরিকতপন্থীরা স্বাদ লাভ করে। উপরোক্ত আজিফা সমূহ আদায়ে বর্ণনাতীত সওয়ার ও উপকার রয়েছে।
হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেন,
যে ব্যক্তি মাগরিবের (নামাযের) পর ছয় রাকাত নামায় পড়ে সেগুলো আদায়ের মাঝখানে যদি খারাপ কথা মা বলে তবে তার জন্য সে ছয় রাকাত নামায বার বছরের ইবাদতের সমান করা হবে।মিশকাতুল মাজাবীহ, পৃষ্ঠা ১০৪) হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে আরো বর্ণিত, তিনি বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি আমার উপর একবার দরূদ শরীফ পড়ে, আল্লাহ তা’আলা তার প্রতি দশবার রহমত বর্ষণ করেন, তার থেকে দশটি গুনাহ্ মোচন করে দেন এবং তার জন্য দশটি। মরতবা বুলন্দ করা হয়। এ হাদীসটি ইমাম নাসায়ী বর্ণনা করেন। মিশকাত, পৃষ্ঠা ৮৬)
হযরত ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেন, কিয়ামত দিবসে মানুষের মধ্যে সে ব্যক্তি আমার সবচেয়ে নিকটবর্তী হবে, তাদের মধ্যে যে ব্যক্তি আমার উপর। সবচেয়ে বেশী দুরূদ শরীফ পড়ে। এ হাদীসটি ইমাম। তিরমিযী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি সংকলন করেছেন। মিশকাত, পৃষ্ঠা ৮৬[
হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি
বলেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ্ তা’আলা বলেন, আমি আমার ব্যাপারে আমার বান্দার ধারনা মোতাবেক হই। আর আমি তার সাথে থাকি
যখন সে আমার জিকির করে অতএব, সে যদি একা একা
আমার জিকির করে তবে আমি একা একা তাকে স্মরণ
করি। আর সে যদি ঈমানদারদের দলের মধ্যে আমার জিকির করে আমি তাদের চেয়ে উত্তমদের (ফেরেশতাদের) দলের মধ্যে তাকে স্মরণ করি। হাদীসটি ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম রাহমাতুল্লাহি তা’আলা স্ব-স্ব সংকলিত হাদীস গ্রন্থ বুখারী ও মুসলিম শরীফে রেওয়ায়েত করেছেন মিশকাতুল মধাবীহ, পৃষ্ঠা ১৯৬
প্রবন্ধ
তরিকতের অন্যতম অজিফা খতমে গাউসিয়া শরীফের ত্বরিকতের দরবারের খেদমত ইহ-পরকালের সফলতা ফজিলত
জ্বরিকায়ে কাদেরিয়াসহ বহু ত্বরিকতের অন্যতম আমল ও অযিফা খতমে গাউসিয়া শরীফ এ খতমে গাউসিয়া শরীফে সূরা ফাতেহা, সুরা এখলাস, সুরা আলাম নাশরাহ এর তেলাওয়াতসহ দুরূদ শরীফ, তাসবীহ কতেকগুলো ইসম আদায় করা হয়। এগুলো আদায়ে অসংখ্য সওয়াব ও বহু সর্বোপরি এ খতমে ভাউলিয়ায়ে কেরামের কানায়। মোবারক সম্বলিত শাজরা রীফের তেলাওয়াত করা হয়।
গাউসে পাক রাদ্বিয়াল্লাহ অনেক রচিত অসিদা শরীফ এবং প্রউলিয়ায়ে কেরামের শানে মেন কবত রয়েছে। এগুলো পাঠকালে মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণের মতো আল্লাহর রহমত নাবিল হয়। রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহ আলায়হি ওয়াসাল্লাম تنزل الرحمة عند ذكر الصالحين আউলিয়ায়ে কেরামের নাম ও শান উচ্চারণ ও বয়ানকালে আল্লাহর রহমত নাযিল হয়। আউলিয়ায়ে কেরামের নামের ওয়াস্তা দিয়ে শাজরা শরীফ পাঠকালে দোয়া কবুল হয়ে যায়, গুনাহ মাফ হয়ে যায়। এ খতমে গাউসিয়া আদায়ে ৭১১১১ (এগার শত এগার বার) সূরা এখলাস শরীফ তেলাওয়াত করা যোর আনল সূরা এখলাস একবার তেলাওয়াত করলে ক্বোরআনুল করীমের একতৃতীয়াংশ তেলাওয়াত হয়ে যায়। আর তিন বার তেলাওয়াতে সম্পূর্ণ কোরআন মজিদ তেলাওয়াত হয়ে যায়। অর্থাৎ সম্পূর্ণ কোরআন শরীফ তেলাওয়াতের সওয়াব পাঠকের আমল নামায় লেখা হয়। এ হিসেবে সূরা এখলাস শরীফ ১১১১বার তেলাওয়াতে ৩৭০ বার খতমে কোরআন মজিদ আদায়ের ও সাওয়াব হয়।
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেন, এ هو الله يعدل ثلث القرآن – করীমের এক তৃতীয়াংশের সমান। [মিশকাত, পৃষ্ঠা ১৮৫] হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, এক পুরুষ নবীজীর দরবারে এসে আরজ করলেন,
يارسول الله اني احب هذه السورة قل هو الله অর্থাৎ “এয়া রসূলাল্লাহ্! আমি এ সূরা- ‘কুল হুয়াল্লাহ্’ কে ভালবাসি।” তখন নবী-ই করীম ঘোষণা দিলেন- ان حبّكَ أَيَّاهَا ادْخَلاكَ الجَنَّة
অর্থাৎ এ সূরার প্রতি তোমার ভালোবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। (মিশকাত, পৃষ্ঠা ১৮৫)
হে ঈমানদারগণ। তোমরা আল্লাহ্ তা’আলাকে ভয় কর, তার নিকট উসিলা তালাশ কর এবং তার পথে জেহাদ কর তাহলে অবশ্যই তোমরা সফল হবে। (সূরা মায়িদা, আয়- এ আয়াতে وسيلة )উসিলা) দ্বারা কী উদ্দেশ্য হবে এ ব্যাপারে তাফসীরকারদের বিভিন্ন অভিমত রয়েছে। মুফতি আহমদ ইয়ার খান নঈমী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি তার লিখেন এখানে মাফসীরে মামীর মধ্যে আয়োরোর মুরশেদের হাতে বায়াত মাধ্যমে এর মধোয়ার মাধ্যমে তার সামান প্রত্যাহার হল) হলো في الوسيلة। অতএব আয়াতের অর্থ দাঁড়ায় হে ঈমানদারগণ তোমরা অন্ত্য এর আয়াতের অর্থ দাঁড়ায় ে কর, তাঁর কাছে মাত্রা সর্বাবস্থায় আল্লাহ তা’আলাকে ওর তার হাতে বায়াত দামানে চলে আস এবং ওই মুরশেদে বরহকের হয়ে তার দামানে চলে আসা অপরাপর দরবার ও ত্বরিকত সম্পর্কীয় খেদমত আদায়ে জেহাদ বা চেষ্টা কর। তাহলে অবশ্যই দুনিয়া ও আখেরাতে তোমরা সফল হবে। এ আয়াত ও তাফসীর দ্বারা বুঝা গেল যে, মুরশেদে বরহকের হাতে বায়াত হয়ে তার দামানে এসে ত্বরিকতের ভেতর প্রবেশ করে পীর মুরশেদের দেওয়া অজিফা ও সবক আদায় করা এবং সবক আদায় সহ দরবার ও ত্বরিকতের বিভিন্ন খেদমত করার নিদেন স্বয়ং আল্লাহ্ তা’আলার। আর এ নির্দেশ পালনে বান্দার ইহ- পরকালীন কল্যাণ ও সফলতার ঘোষণা স্বয়ং আল্লাহর পক্ষ হতে। সুতরাং যারা সিলসিলায়ে আলিয়া জ্বাদেরিয়ার খলিফা আওলাদে রাসূল রাহনুমায়ে শরিয়ত ও ত্বরিকত, হাদিয়ে দ্বীন ও মিল্লাত দাদা হুজুর কেবলা সৈয়্যদ আহমদ শাহ্ রাহমাতুল্লাহি আলায়হি, হুজুর কেবলা সৈয়্যদ মুহাম্মদ 201 200 R STRANGER THIS R S T সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ মুদ্দাজিল্লুহুল আলীর মতো মুরশেদে বরহকের হাতে বায়াত হয়ে ত্বরিকতে প্রবেশ করে তাঁদের জন্য ফরজ ইবাদত আদায়সহ দুরূদ, জিকির, সালাতুল আওয়াবিন আদায়ের অজিফা ও সবক পালন করা শায়খ খাজা আবদুর রহমান চৌরভী রহমাতুল্লাহি আলায়হির ওরস মোবারক, শায়খুল মশায়েখ সৈয়্যদ আহমদ শাহ সিরিকোট রহমাতুল্লাহি আলায়হির ওরস মোবারক, তার দেওয়া জামেয়ার খেদমত এবং রাহনুমায়ে শরিয়ত ও ত্বরিকত হুজুর সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ্
রহমাতুল্লাহি আলায়হির ওরস মোবারকের মাহফিল সহ খানকাহ্, দরবারের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হাজির হওয়া, কাজ করা, দায়িত্ব পালন করা এবং হযরাতে কেরামের প্রতিষ্ঠিত ও গাউসিয়া কমিটিসহ দেশের প্রত্যন্ত জামেয়া আনজুমান আনজুমান ট্রাস্ট কর্তৃক পরিচালিত মাদরাসা ও খানকাহ সমূহের খেদমত করা, খতমে গাউসিয়া শরীফ ও গেয়ারতী শরীফ, বারতী শরীফসহ ত্বরিকতের বিভিন্ন মাহফিলে অংশ গ্রহণ করা وجاهدوا في سبیله এর অন্তর্গত এবং এগুলোর খেদমতে ইহ-পরকালীন কলাগ ও সারলিক ও ঘন-সৌপতের প্রাচুর্য, সুখ পাতি, ও সফলতা রয়েছে। দুনিয়াতে এর কল্যাণ ও সফলতা হলো বলিলা। দুনিয়ার জীবনে ঈমান ও আকিদার সম্মান, ও মায়া এবং দুনিয়া থেকে বিদায়ের সময় ঈমান নিয়ে যেতে পারা। আর পরকালীন কল্যাণ ও সফলতা নিয়ে যেতে আরামে ও শান্তিতে থাকা, ময়দানে মাহশরে মুরশেদে বরহকের ছায়াতলে থাকা। সর্বোপরি জান্নাতের হয়ে অনন্তকাল জান্নাতবাসী হওয়া। কেননা যে অধিকারী হতে প্রবেশ করে শরিয়ত ও তরিকত পালন করে এবং তরিকতের খেদমতে নিবেদিত থাকে। শয়তান তাকে কখনো ধোঁকা দিতে পারে না। তার ঈমান আকিদা হরন করতে পারে না। তাই এককথায় বলা যায় ত্বরিকত গালন ঈমান ও আকিদার রক্ষা কবচ। তাই তো কোন উর্দু কবি বলেছেন, ‘প্রকৃত শরীয়ত চর্চা ও সাধনা হলো (হে আল্লাহ্।) আপনার অলি-গলিতে আসা যাওয়া করা। আর
প্রকৃত ইবাদত হলো আপনাকে দেখে দেখে ইবাদত করা। আর এ কথা অবশ্যই সত্য যে, আল্লাহর অলির সরস হলো আল্লাহর গলি। আল্লাহর অলির দরবার হলো অন্তর প্রাপ্তির জায়গা। অলির দরবারে কিছুক্ষণ বনা এক পশুও বারিক মানুষকে সংশোধনাকো বেশি উত্তম।
হক্কানী পীর-মুরশেদের হাতে একজন মানুষ বায়াত হওয়ার পর নামাযী হয়ে যায়। কারো প্রতি জুলুম করে না, হার খেতে ভয় পায়। পাপ কাজে পা বাড়াতে ভয় পায়। মুস অশ্রীল কথা বের করে না। মিথ্যা-কথা, মিথ্যা সাক্ষা দিনাজা হতে বিরত থাকে। শিরিয়ত পাকাতি, রহামাদ হয় না। দুনিয়ায়তে দুনিয়ার অন্তে বিমুখ হয়ে পরকালদুর হতে শুরু হায়াতের উপর পরকালীন হায়াতকে প্রাধান্য দেয়। তার মধ্যে আউলিয়ায়ে কেরদের চরিত্র আসতে শুরু করে। দেখা যায় মুরশেদে বরহকের দামান ধরে রিয়াজতের মাধ্যমে একজন পাপী বান্দাও জ্ব বুযর্গ হয়ে যায়। এটা হলো ত্বরিকতের প্রভাব। তাইতে
বলা হয়েছে- نگاه ولی میں یہ یاثیر دیکھی بدلتی هزاروں کی تقدیر دیکھی অর্থাৎ অলির কৃপাদৃষ্টিতে এ প্রভাব দেখেছি, হাজার হাজার লোকের তাকদীর পরিবর্তন হয়ে যেতে দেখেছি।